কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১২:০৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। কয়েকদিন ধরে চলমান ঠান্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশায় মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও চরাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কষ্ট বেড়েই চলেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগার। সকাল থেকে শীতল বাতাসে কাঁপছে মানুষ। দিনের বেলায় সূর্য দেখা মিললেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত উষ্ণতা।
শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই স্বাভাবিক কার্যক্রমে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। দোকানপাট খোলায় দেরি হচ্ছে, রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে এসেছে।
কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলামিন মিয়া (৫০), জসিম উদ্দিন (৪৫) ও আব্দুল জলিল (৬০) জানান, শীতের তীব্রতায় মানুষের জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দিনমজুর শ্রেণি বিপাকে পড়েছেন।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের দিনমজুর আকবর হোসেন (৫৫) বলেন,“শীতের কারণে সকালে কাজে যেতে দেরি হয়। হাত-পা ঠিকমতো চলে না। কিন্তু কাজ না করলে পেট তো চলবে না।”
নাগেশ্বরীর নুনখাওয়া ইউনিয়নের জাহিদুল ইসলাম (৫০) বলেন,“এইবার ঠান্ডা অনেক বেশি। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। এখনও কোনো কম্বল পাইনি।”
একই এলাকার হামিদুল ইসলাম (৫৬) বলেন,“ঠান্ডায় কাজ করলে হাত-পা জ্বালা করে। ঠিকমতো কাজ করতে পারি না।”
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে সন্তানকে চিকিৎসা করাতে আসা রবিউল ইসলাম (৪০) বলেন,
“আমার ছেলের জ্বর-সর্দি বেড়ে যাওয়ায় ডাক্তার দেখাতে এনেছি।”
এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. স্বপ্নন কুমার বিশ্বাস জানান,“এখনও শীতজনিত রোগীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। তবে প্রতিদিন বিভিন্ন উপজেলা থেকে রোগীরা আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।”
জেলা প্রশাসক অন্নপূর্ণা দেবনাথ বলেন,“শীতবস্ত্র বিতরণের তালিকা তৈরি হয়েছে। খুব দ্রুত জেলার শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ শুরু হবে।”
রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান,“তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। কুয়াশা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডার মাত্রা বাড়বে।”
অধিক শীতের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দিন দিন আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।










