শিক্ষা

প্রভোস্টকে ২৫ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করল শিক্ষার্থীরা

  রাবি প্রতিনিধি ১০ জুলাই ২০২৫ , ৬:৩৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলের দীর্ঘদিনের অব্যবস্থা ও জরাজীর্ণ পরিবেশের প্রতিবাদে গত ৯ জুলাই শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রভোস্টের কাছে ২৫ দফা দাবিনামা সংবলিত একটি স্মারকলিপি পেশ করেছেন। স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিন ও ডাইনিংয়ের খাদ্যমান থেকে শুরু করে টয়লেট, পাঠাগার, হলের নিরাপত্তা, পানির সমস্যা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
স্মারকলিপিতে ছাত্ররা অভিযোগ করেন, “হলের নানাবিধ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে।”
উল্লেখযোগ্য দাবিসমূহ:
১. হল ক্যান্টিনের স্থায়ী সমাধান ও ডাইনিংয়ের খাবারের মানোন্নয়ন, খাবারের দামে স্বচ্ছতা ও মান বজায় রাখা।
২. সাবমার্সিবল বিকল হলে বিকল্প হিসেবে টিউবওয়েল সচল রাখা, যাতে নিরাপদ পানি নিশ্চিত হয়।
৩. শহীদ শামসুজ্জোহা স্মৃতি পাঠাগার উন্মুক্ত ও সমৃদ্ধ করা উন্নতমানের বই দিয়ে।
৪. প্রতিটি ব্লকে দুইটি বেসিন স্থাপন এবং সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণ।
৫. টয়লেট ও ওয়াশরুম আধুনিকীকরণ, সাইড ওয়ালসহ নিয়মিত পরিষ্কার রাখা।
৬. রাতের দায়িত্বে অবহেলা বন্ধে গার্ডদের তদারকি ও সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও হলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।
৭. বর্ষাকালে কর্দমাক্ত রাস্তা সংস্কার, বিশেষ করে জোহা হল হতে সোহরাওয়ার্দী হল সংলগ্ন রাস্তা।
৮. রিডিং রুমের পরিবেশ উন্নয়ন ও ইন্টারনেট রুম পুনরায় চালু করা।
৯. ফ্রিজ, শাওয়ার ও কাপড় রাখার স্ট্যান্ড স্থাপন।
১০. হল বিতর্ক সংসদ পুনরায় চালু করে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়তা।

শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করেন, “হলের আশপাশ অপরিস্কার থাকায় রাতের বেলায় মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে। এছাড়া, মুক্তমঞ্চের পাশে বসার বেঞ্চ নেই যা স্হাপন করা জরুরি, মসজিদে নামাজের সময়সূচিসহ ডিজিটাল ঘড়িও অনুপস্থিত।”

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শামিম বলেন, “হল গার্ড ডিউটিতে থাকার পরও সাইকেল চুরির মতো ঘটনা ঘটে, এগুলো মেনে নেওয়া যায় না। গত ৮ জুলাই এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা হলের সার্বিক নিরাপত্তার জোর দাবি জানাই।”
স্মারকলিপি প্রদান করার সময় হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপিটি প্রদান করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আবদুল বারিক, যিনি অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, “এই দাবিগুলো গত ৪ মাস ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসেছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে কেবল আবাসন নয়, বরং পড়াশোনার জন্যও একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে। ”
প্রভোস্ট ড. মো: আল আমিন সরকার স্মারকলিপি গ্রহণ করে জানান, “ছাত্রদের পক্ষ থেকে যে সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়েছে, তা যৌক্তিক ও গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”