পরে রোগীর স্বজনরা ডিএমএফকে ডাকতে গেলে দুর্বব্যবহার করেন, এবং দেখতে যান। এর কিছুক্ষণ পর শ্বাসকষ্টের ওই রোগী মৃত্যু বরণ করেন। রোগীর মৃত্যুর পর তার স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে জরুরী বিভাগে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক না থাকার বিষয়টি বেরিয়ে আসে এবং ভাড়াটে ডিএমএফ রুবেল পালিয়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের সামনে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। মৃত ওই ব্যাক্তির নাম জামাল বাদশাহ (৫৫)। তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
নিহত পরিবারের অভিযোগ, নিহত জামাল গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে পরিবারের লোকজন তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে জরুরি বিভাগের সামনে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও দেখা মেলে না চিকিৎসকের। পরে রুবেল নামের একজন ডিএমএফ পাস ছাত্র এসে রুগীকে দায়সারাভাবে দেখেন, ততক্ষণে রুগীর মৃত্যু হয়। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও জরুরি বিভাগ জুটে আসেন। এসময় আরএমও হাসপাতালে এসে দায়িত্বরত চিকিৎসককে ফোন দিলে তিনি বাহিরে আছেন বলে জানান। ততক্ষণে খবর পেয়ে অনেক সাংবাদিকও জরুরি বিভাগে এসে উপস্থিত হয়।
এসময় সাংবাদিকরা ভারপ্রাপ্ত আরএমও এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কালিপদ সরকার নামের একজন এমবিবিএস চিকিৎসককে জরুরি বিভাগের দায়িত্ব দেয় হাসপাতাল কতৃপক্ষ। কিন্তু ওই চিকিৎসক হাসপাতালকে না জানিয়ে তার স্থলে একজন ডিএমএফ পাস করা ছাত্রকে দায়িত্ব দিয়ে লালমনিরহাটে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চলে যান।
অপর দিকে ২৫০ শষ্যা জেনারেল হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও, ৫০০ টাকার বিনিময়ে নিয়মিত ডিএমএফ পাস ছাত্রকে দিয়ে চালানো হয় জরুরি বিভাগ। এমন অভিযোগ অসংখ্য রুগীর স্বজন ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের অনেক কর্মচারীর। এতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসার অবহেলায় ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা।
নিহত রুগীর স্বজন একরামুল হাসান বলেন, আমার ফুপার রাতে হঠাৎ শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে নিয়ে আসি আমরা। পরে জরুরি বিভাগের সামনে ১ ঘণ্টাখানিক অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পাই না। পরে রুবেল নামের এক ডিএমএফ ডাক্তার এসে দেখতে দেখতে তার মৃত্যু হয়। ফুপার চিকিৎসার অবহেলায় মৃত্যু হলো। আর এমন যেন অমানবিক মৃত্যু কারও না হয় এই কামনা সরকারের কাছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ভারপ্রাপ্ত ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে হাসপাতালে। কি কারণে দায়িত্বরত চিকিৎসক কতৃপক্ষকে না জানিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও অর্থের বিনিময়ে কাউকে যদি জরুরি বিভাগে দায়িত্ব দিয়ে থাকেন, তারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি জানতে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন এর মুঠোফোন একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।