সারাদেশ

উলিপুরের যানজট নিরসনে ৮ দফা প্রস্তাবনা দিলেন এড. এস.এম নুরে এরশাদ সিদ্দিকী

  উত্তরের আলো ২৫ আগস্ট ২০২৫ , ২:০৩ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

তিস্তা নদীর উপর দ্বিতীয় সেতু “মওলানা ভাসানী সেতু” বা হরিপুর-চিলমারী সেতুটি উদ্বোধন করা হয়েছে গত ২০ আগস্ট ‘২৫। এই সেতুটি মূলত কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। ফলে সড়কপথে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব ও সময় কমবে। এতোদিন লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ী ও রংপুর জেলা হয়ে ঘুরে গাইবান্ধা যেতে হতো। এই সেতুটি নির্মাণের ফলে উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার জনগণ সবচেয়ে বেশী উপকৃত হবে; সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করতে পারলে এই অঞ্চলের অর্থনীতি, চরকৃষি বাজার ও রাজধানী ঢাকায় পণ্য সরবরাহ চাঙ্গা হবে।

উদ্বোধন হলেও সেতুটির পূর্ব দিকে কুড়িগ্রাম চিলমারী অংশের সংযোগ সড়কের কাজ এখনো অসম্পন্ন রাখা হয়েছে। এমতাবস্থায় সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়ায় যানবাহন চলাচলে ইতোমধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

এবার আসি মূল কথায়, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হইতে উলিপুর-চিলমারীগামী সড়কটি যেটি কে.সি রোড নামে অধিক পরিচিত সেই সড়কটি উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর এই ০৪ টি উপজেলা সদরের যোগাযোগের একটি গুরুপূর্ণ সড়ক। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে এলাকাবাসীর দাবী করা সত্ত্বেও সড়কটিকে বিশ্বরোড বা মহাসড়কে পরিণত করা হয় নি। অন্যদিকে মওলানা ভাসানী সেতু চালু হওয়ায় আন্তঃজেলা ও রাজধানী ঢাকাগামী যাত্রীবাহী কোচ, মালবাহী ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচলে এই কে.সি রোডটির উপর অতিরিক্ত চাপ বাড়বে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনাসহ জনসাধারণের জান ও মালের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় জনগণ। এদিকে উলিপুর পৌর শহরের যানজট, গুনাইগাছ মোড়ের ট্রাফিক জ্যাম, দুর্গাপুর হাটের দিনে দুর্গাপুর বাজারে তীব্র যানজট আমাদের সবারই জানা। ফলে নিম্নোক্ত দাবীগুলোকে দ্রুত আমলে নেয়াটা জরুরি:

১) কুড়িগ্রাম হইতে উলিপুর-চিলমারী সড়কটিকে বিশ্বরোড বা মহাসড়কে উন্নীতকরণ;

২) উলিপুর পৌরসভায় একটি বাইপাস রোড নির্মাণ;

৩) বিকল্প সড়ক হিসেবে উলিপুর থানা মোড় হইতে হাতিয়া চৌমুহনী নতুন অনন্তপুর, মন্ডলের হাট বটতলী, দুর্গাপুর যমুনা গোড়াই হয়ে কুড়িগ্রাম মোগলবাসাগামী পাঁকা রাস্তাটিকে প্রশস্তকরণ;

৪) উলিপুর পৌরসভার যানজট নিরসনে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ; যেমন- উলিপুর মূল শহরের রাস্তাগুলোকে সরকারি উদ্যোগে প্রশস্তকরণ; যত্রতত্র ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট ও অটোরিকশা বা গাড়ি পার্কিং নিয়ন্ত্রণ; ০৫ টি পয়েন্ট নির্ধারণ করে ট্রাফিক পুলিশিং বৃদ্ধি; যেমন: ধামশ্রেণি মোড় পয়েন্ট, ধরনীবাড়ী পয়েন্ট, বাসস্ট্যান্ড পয়েন্ট, গুনাইগাছ মোড় পয়েন্ট, বজরা-তবকপুর পয়েন্ট ইত্যাদি।

৫) অনেক সময় জলাবদ্ধতার কারণেও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়; ট্রাফিক জ্যাম লেগে যায়। হঠাৎ বৃষ্টিতে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য শহর থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে উন্নতকরণ;

৬) উলিপুর নতুন বাস স্ট্যান্ড হইতে গুনাইগাছ মোড় পর্যন্ত রাস্তায় ফুটপাত নির্মাণ এবং অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদকরণ;

৭) চিলমারী-উলিপুর-কুড়িগ্রাম ওয়াপদা বাঁধ রাস্তাটিকে সংস্কার ও পাকাকরণ;

৮) প্রতি শুক্রবার ও মঙ্গলবার দুর্গাপুরে মেইন রোডে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই কে.সি রোডে জনদুর্ভোগ নিরসনে দুর্গাপুরে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা ও ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটটিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নতুন জায়গায় স্থানান্তর;

স্থানীয় জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারে টেকসই উন্নয়নের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে! আসুন, সমৃদ্ধ উলিপুর গড়ি!

————————
এড. এস.এম নুরে এরশাদ সিদ্দিকী
এলএল.বি (অনার্স); এলএল.এম (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
সংসদ সদস্য প্রার্থী, ২৭ কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর)
উচ্চতর পরিষদ সদস্য, গণঅধিকার পরিষদ-জিওপি
স্পেশাল প্রসিকিউটর (এসিস্ট্যান্ট এটর্নি জেনারেল) ও আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
চেয়ারম্যান, কুড়িগ্রাম নদী রক্ষা ও চর উন্নয়ন ফাউন্ডেশন
ও আহবায়ক, সমৃদ্ধ উলিপুর গড়ি।